বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট-ব্যবস্থার গতি ধীর হয়ে পড়েছে। এটাকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাইবার হামলা’ হিসেবে দেখছেন ইন্টারনেট নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। স্পাম-প্রতিরোধী একটি গ্রুপ ও একটি ওয়েব হোস্টিং প্রতিষ্ঠানের দ্বন্দ্বের পর এ ঘটনা ঘটে। নেটফ্লিক্সের মতো জনপ্রিয় সেবাগুলোতে এই ‘সাইবার হামলা’র প্রভাব পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এতে ব্যাংকিং ও ই-মেইল ব্যবস্থায়ও প্রভাব পড়তে পারে। পাঁচটি দেশের জাতীয় সাইবার-পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে।
যে দুটি প্রতিষ্ঠানের দ্বন্দ্বের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে তারা হলো, স্পামহাস ও সাইবারবাংকার। স্পামহাস হচ্ছে যুক্তরাজ্যের লন্ডন ও সুইজারল্যান্ডের জেনেভাভিত্তিক একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এটি স্পাম ও অন্যান্য অনাকাঙ্ক্ষিত উপাদান খুঁজে বের করার মাধ্যমে ই-মেইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করে থাকে। এটা করতে তারা বেশকিছু ব্লক তালিকা তৈরি করে, যা সার্ভারগুলো থেকে ইন্টারনেটে ক্ষতিসাধন করার উদ্দেশ্যে ব্যবহূত হয়।
আর সাইবারবাংকার হচ্ছে নেদারল্যান্ডভিত্তিক ওয়েব হোস্টিং প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা দিয়েছে, তারা কেবল শিশু পর্নোগ্রাফি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো ছাড়া সবকিছুই ইন্টারনেটে রাখতে দেবে।
সম্প্রতি সাইবারবাংকারের সার্ভারগুলো ব্লক করে দেয় স্পামহাস। এ ঘটনার পর সাইবারবাংকারের মুখপাত্র দাবিকারী এসভেন ওলাফ কামফুইস এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেন, স্পামহাস তাদের অবস্থানকে অপব্যবহার করছে। ‘ইন্টারনেটে কী যাবে আর কী যাবে না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা স্পামহাসকে দেওয়া উচিত নয়।’
স্পামহাসের অভিযোগ, সাইবারবাংকার পূর্ব ইউরোপ ও রাশিয়ার কিছু ‘অপরাধ চক্র’ এই সাইবার হামলার পেছনে জড়িত। অভিযোগের বিষয়ে বিবিসির পক্ষ থেকে সাইবারবাংকারের মন্তব্য চাওয়া হয়েছিল। তবে তারা এই অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
স্পামহাসের প্রধান নির্বাহী স্টিভ লিনফোর্ড জানিয়েছেন, এই সাইবার হামলার ধরন ছিল নজিরবিহীন। তিনি বলেন, ‘আমরা এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এই হামলার আওতায় রয়েছি। তবে আমরা ঠিক রয়েছি। তারা আমাদের ফেলে দিতে পারেনি। সবকিছু ঠিকঠাক রাখতে আমাদের প্রকৌশলীরা টানা কাজ করে যাচ্ছেন।’ বিবিসি।